General rules of domestic puja: ঘরোয়া পূজার সাধারণ নিয়ম

rules-of-domestic-puja

সাধারণ মানুষের আগে জানা প্রয়োজন, কেন আমরা নির্দিষ্ট নিয়মে (rules of domestic puja) পূজা-পাঠ, হোম-যজ্ঞ করব। তার একমাত্র বিশেষ কারণ হল, পূজা অর্থে ভগবানকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ডাকা, শ্রদ্ধা করা, ভক্তি করা, আমাদের হৃদয়-মনের স্থানে বসানো।

মনের প্রেরণাকে আরো উজ্জীবিত করা। যে দেবদেবীকে মানুষ পূজা করে, তাকে নিজের ভালমন্দ সমর্পণ করার আর এক নাম পূজা।

এই সমস্ত দেবদেবীকে ডাকলে পার্থিব জগতের সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, দারিদ্রতা, দুর্ভাগ্যকে জয় করে বা নিয়ন্ত্রণের দ্বারা সৌভাগ্যকে সহজেই জয় করতে সক্ষম হয়।

এই জগতসংসার বিশ্ব-মহামায়ার অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। পার্থিব জগতে যাহা কিছুর মধ্যে রূপ, রস, গন্ধ আছে তাহাই সাকার রূপ শক্তি মায়ার অধীনে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

Table of Contents

rules of domestic puja

ঘরোয়া পূজার (Rules of domestic puja) নিয়ম প্রণালী

সুতরাং মানুষের জানা প্রয়োজন নিত্য পূজা -এর সাধারণ কিছু নিয়ম (Rules of domestic puja) আছে। আমরা সবাই জানি যে একজন পুরোহিত কিংবা ব্রাহ্মণের মতো নিখুঁত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পূজা করা একজন সাধারণ গৃহস্ত মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু তার এই অর্থ নয় যে আমরা puja করবোনা বা পূজার নূন্যতম নিয়মগুলো অনুসরণ করবোনা।

নিত্য গৃহ দেবতা পূজা হউক অথবা একটি বিশেষ তিথির অথবা বিশেষ দেবী-দেবতার পূজা, সব পূজার একটি সাধারণ নিয়ম (Rules of domestic puja) আছে। সেই নিয়ম অনুসরণ করে যেকোনো পূজা খুব অনায়াসে করে ফেলা যায়। 

যে যে বিষয় বা বস্তুর মালিক যে যে দেব বা দেবী তাদেরকে মনের একাগ্রতার মাধ্যমে, সঠিক নিয়মে (rules of domestic puja) পূজাপাঠ, জপ, ধ্যান করতে পারলে ব্রহ্মাদেব আশীর্বাদ করেন।  বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এই সমস্ত দেবদেবীর আরাধনার মাধ্যমে আমরা জগতের এবং নিজের কল্যাণ সাধন করতে পারি। 

ঘরোয়া পূজোর আগের দিন

যে দেবতা বা দেবীর puja করবেন, সেই দেবদেবীর প্রতি সম্পূর্ণ ভক্তি, বিশ্বাস ও মনোনিবেশ চিন্তায় নিষ্ঠা থাকতে হবে এবং আগের দিন নিরামিষ ভোজন ও পূজার দিনে উপোস থাকবেন তবে একেবারে নির্জলা উপবাসে থাকবেন না, বিশেষ করে গৃহী।

তার কারণ হল, আমরা নিরাকার ব্রহ্মের পূজা করি বটে কিন্তু সাকারের মধ্য দিয়ে নিরাকার ব্রহ্মের পূজা করি, অর্থাৎ এই বিশ্বজগতের সমস্ত মানুষই একমাত্র পরমাত্মাকেই সেবা করেন।

কেউ প্রত্যক্ষ আবার কেউ পরোক্ষ ভাবে পূজা, পাঠ, জপ, হোম, তর্পণ ইত্যাদি করেন সুতরাং সেই পরমব্রহ্ম বা পরমাত্মার সাকার রূপ হচ্ছে জগতের জীব তথা মানুষ। 

সেই কারণেই মানুষের হৃদয়ের আত্মাকে কখনো নির্জলা কষ্ট দিয়ে অন্যান্য দেব বা দেবীর পূজা করলে ভগবান রুষ্ট হয়। সর্বকার্য, আশা নিষ্ফল হয়।

domestic worship

ঘরোয়া পূজার (Rules of domestic puja) ধাপগুলি

1) আচমন

আচমন অনেক রকম পক্রিয়ায় করা যায়। তবে দুটি পক্রিয়া হচ্ছে পূজার জন্য পরিপূরক। তাছাড়া যারা খুব সহজভাবে কার্য সিদ্ধি করতে চায় তারা  শুধু বিষ্ণু স্মরণ করেও আচমন ক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে।

কিন্তু আমরা এতো সংক্ষিপ্ত আচমনের কথা বলবো না। তার কারণ আমরা মনে করি যারা পূজা পাঠ করতে ভালোবাসেন তারা নিজেদের মনের ভালোবাসা, ভক্তি থেকে পূজা করেন।

সেক্ষত্রে কিছু নিয়ম অন্তত মেনে চলা উচিৎ। তাতে নিজের করা পূজার প্রতি একটা সততা এবং নিজের মনে একটা ভালো অনুভব থাকে। নিম্নে সেই দুই পদ্ধতিতে ঘরোয়া পূজার আচমন পক্রিয়া উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম পদ্ধতিতে আচমন

গৃহকর্তা বা কর্ত্রী পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসে কুশ দিয়ে আংটি দুটি তৈরি করে দুই হাতে পার্শ্বের আঙ্গুলে ধারণ করবে এরপরে কোশা থেকে অল্প একটু শুদ্ধ জল নিয়ে মুখ শোধন করিবে।

যদি কুশের আংটি তৈরী করা সম্ভহব না হয় সেক্ষত্রে অনামিকা আঙুলের মাধ্যমে কোশা থেকে অল্প একটু শুদ্ধ জল নিয়ে মুখ শোধন করিবে।

মন্ত্রঃ- ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ এইভাবে তিনবার বলে জল মুখে নেবেন। হাতের তালুতে জল নিয়ে (হাতের তালুকে ব্রাহ্মতীর্থ বলে) এবারে ডান হাতের তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা দ্বারা মুখে ঠোঁটে স্পর্শ করে তর্জনী দিয়ে নাক স্পর্শ করিবে। অনামিকা আঙুল দিয়ে দুই চক্ষু ও দুই কান এবং কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে নাভি এবং ডান হাতের তালু দিয়ে হৃদয় ও দুই বাহুদ্বয় স্পর্শ করে (করজোড়ে)।

বিষ্ণু স্মরণ পাঠ করবে- ওঁ তদবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম। ওঁ বিষ্ণুঃ, ওঁ বিষ্ণুঃ ওঁ বিষ্ণুঃ, ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রোবা সর্বাবস্থাং গতোহপিবা যঃস্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং সবাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ, ওঁ সর্বমঙ্গলাঃ মঙ্গল্যং, বরেণ্যং বরদং শুভম। নারায়ণং নমস্কৃত্য সর্ব (অমুক) কর্মাণি কারয়েৎ, নমঃ মাধবো মাধবো বাচি, মাধবো মাধবো হৃদি, স্বরন্তি সাধবঃ সর্বে মমোসর্বকার্যেযু মাধবম।। নমঃ মাধবায় নমঃ (৩ বার)।।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে আচমন

মন্ত্রঃ- ওঁ কেশবায় নমঃ, ওঁ নারায়নায় নমঃ ওঁ মাধবায় নমঃ

এই তিন মন্ত্র দিয়ে আচমন করতে হবে। প্রতিবার হাত ধুয়ে নিতে হবে। তারপর হাতজোর করে পথ করে নিন্মলিখিত  মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে।

বিষ্ণু স্মরণ পাঠ করবে- ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ো দিবীব চক্ষুরাততম্। তদ্‌ বিপ্রাসো বিপন্যবো জাগ্‌বাংসঃ সমিন্ধতে বিষ্ণোর্যৎ পরমং পদম্।। 

2) সঙ্কল্প

কুশীতে জল, তিল, হরীতকী ও পুষ্প লইয়া ডান হাতে ঢাকিয়া দক্ষিণ জানু মাটিতে রাখিয়া বলিবে- “বিষ্ণুরোম তৎসদদ্য… মাসি… পক্ষে…তিথৌ …গোত্রঃ শ্রী…দেবশর্মা (নিজের গোত্র ও নাম বলিবে)। শ্রী…দেবতা প্রীতিকামো (অথবা শ্রীবিষ্ণুপ্রীতিকামো) গণপত্যাদি নানাদেবতা পূজা পূর্বকং শ্রীশ্রী…দেবতা পূজনমহং করিয্যে” (পরের বাড়ির পূজা হইলে নিজের নামের পরে অমুকগোত্রস্য শ্রী অমুক দেবশর্মণ শ্রী… দেবতাপ্রীতিকামে… পূজনমহং করিষ্যামি বলিবে। পরে ঐ জলের কিঞ্চিৎ নিজের ঈশান কোণে ফেলিয়া দিয়া অবশিষ্ট জলাদি তাম্রকুণ্ডে ফেলে দিতে হবে। অতঃপর হাতজোড় করিয়া স্ববেদীয় সঙ্কল্পসূক্ত পাঠ করিতে হইবে।

3) আসনশুদ্ধি

নিজের আসনে একটি ত্রিকোণ মণ্ডল করিয়া তাহাতে এতে গন্ধপুষ্পে ‘হ্রং আধারশক্তিকমলাসনায় নমঃ’ বলিয়া একটি পুষ্প দিয়া আসনে হাত রাখিয়া পাঠ করিতে হইবে:-

আসনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কৃৰ্ম্মো দেবতা আসনপরিগ্রহণে বিনিয়োগঃ। ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকা দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রঃ কুরু, চাসনম্।। 

এই বলিয়া আসনশুদ্ধি করিবে। অনন্তর আতপতণ্ডুল গ্রহণ করিয়া, সেই আসনের দশদিকে ছড়াইয়া ঊর্দ্ধে তালত্রয় দিয়া, তুড়ি দিয়া দশদিক বন্ধন করিতে হইবে। তাহার পর, আসনে উপবেশন করিয়া, কৃতাঞ্জলিপূর্ব্বক

বামে- ওঁ গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরমগুরুভ্যো নমঃ ওঁ পরাপর-গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরমেষ্ঠিগুরুভ্যো নমঃ। দক্ষিণে- ওঁ গণপতয়ে নমঃ। মধ্যে- জগন্নাথদেবতায়ৈ নমঃ বলিয়া প্রণাম করিতে হইবে।

4) জলশুদ্ধি ও কোষাকুষি স্থাপন

 কোষাকষির নীচে (ব) চিহ্ন এঁকে বসিয়ে কালো তিল, লাল ফুল, চন্দন, কাঁচা দুধ ও দই যব ইত্যাদি দিয়ে কোষা জলপূর্ণ করিবেন। এবারে (অঙ্কুশ মুদ্রা) দ্বারা অর্থাৎ ডান হাতের মধ্যমা ঐ কোষার জলে ঠেকিয়ে এবং বাম হাত দিয়ে ডান হাত ঢেকে ডান হাতের মধ্যমা ঐ জলে ঘোরাবে আর মন্ত্র বলবে- ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতী, নর্মদে সিন্ধু কাবেরি জলেহস্মিন সন্নিধিং কুরু।।

যদি এইসব মুদ্রা সম্পর্কে  জ্ঞান না থাকে অথবা করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ না হয় সেক্ষত্রে জলের পাত্র স্পর্শ করে মন্ত্র উচ্চারণে জলশুদ্ধি করা যেটা পারে।

5) পুষ্পশুদ্ধি

ফুল স্পর্শ করে- ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্পসম্ভবে। পুষ্পচয়াবকীর্ণে হুং ফট্ স্বাহা।

6) দ্বারদেবতা পূজা

 পুষ্প লইয়া “এতে গন্ধেপুষ্পে ওঁ দ্বারদেবতাভ্যো নমঃ” মন্ত্রে পূজাগৃহের দ্বারদেশে নিক্ষেপ করিবে। পরে “এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ব্রহ্মণে নমঃ” “এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বাস্তুপুরুষায় নমঃ” মন্ত্রে পূজা করিবে।

7) সূর্য্যার্ঘ্য নিবেদন ও সূর্য প্রণাম

 কুশীতে গঙ্গাজল, পুষ্প, চন্দন, দূর্বা, আতপ চাউল, তিল, যব দিয়ে দুই হস্তে স্পর্শ করে ধরিয়া মন্ত্র বলবে-“ওঁ নমো বিবস্বতে।

ব্রহ্মাণ ভাস্বতে বিষ্ণুতেজসে জগতসবিত্রে শুচয়ে সবিত্রে কর্মদায়িনে। ইদমর্থ্যং ওঁ নমো ভগবতে ভগবান শ্রীসূর্য্যায় নমঃ” বলে।

সূর্য্যপ্রণাম করিবে- ওঁ জবাকুসুমশঙ্কাসং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম। ধ্বান্তারিম সর্বাপাপঘ্ন প্রণতোহস্মিনদিবাকরম্।।

8) গণেশাদির পূজা

 প্রথমে গণেশ পূজা-ধ্যান-কূর্মমুদ্রায় লাল ফুল, চন্দন মাখিয়ে নিয়ে মন্ত্র- ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং প্রস্যন্দন্মদগন্ধলব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ড স্থলম, দন্তাঘাত বিদারিতারি রুধিরৈঃ সিন্দুর শোভাকরং বন্দে শৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম।।

prarthona mudra
প্রার্থনা মুদ্রা

এরপরে ঘণ্টাবাদ্য সহ ফুল, চন্দন দ্বারা পূজা করবে। 

গাং এষ গন্ধো গণেশায়ঃ নমঃ (সুগন্ধ নিয়ে)-

গাং ইদং সচন্দন পুষ্পং গণেশায় নমঃ,

গাং এষ ধূপো গণেশায় নমঃ,

গাং এষ দীপো গণেশায় নমঃ,

মমো ইষ্ট দেব বা দেবী সম্প্রদানের সহিত গাং ইদং সোপকরণ এতদ্ অক্ষত নৈবেদ্যং গণেশায় নমঃ।

ইষ্ট দেব বা দেখীর সহিত গাং গণেশায়ৈ পাদুকায়ৈ পূজায়মিনমঃ, ইষ্ট দেব বা দেবীর সহিত গাং গণেশায়ৈ পাদুকায়ৈ তর্পয়ামিনমঃ।

গণেশ গায়ত্রী- ওঁ তৎপুরুষায় বিদ্মহে বক্রতুণ্ডায় ধীমহি তন্নো দন্তী প্রচোদয়াৎ।

গণেশ প্রণাম- (করজোড়ে)  ওঁ দেবেন্দ্র মৌলিকমন্দার মকরন্দ কনারুণাঃ, বিঘ্নং হরন্তু হেরম্ব চরণাম্বুজ রেণবঃ, একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজাননম। মমো সব্ব বিঘ্ননাশকরং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্।।

9) নারায়ণাদির অর্চনা

একটি করিয়া গন্ধপুষ্প নিয়ে নিম্ন মন্ত্র বলে পূজার ঘটে বা তাম্রপাত্রে দিবেন। মন্ত্র: যথা-

এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ নারায়ণায় নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে মম শ্রীগুরুবে নমঃ গুরুকরণ না করিলে তারা বলবে এতে গন্ধপুষ্পে মম গুরু পিতা মাতায়ৈ নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ আদিত্যাদি নবগ্রহেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে ইন্দ্রাদি দশদিক পালেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে মৎসাদি দশাবতারেভ্যো নমঃ।

এতে গন্ধপুষ্পে সর্ব্বেভ্যো (পূজনীয় অমুক) দেব বা দেবীভ্যো নমঃ।

Rules of domestic puja: বিশেষ পূজা শুরু

এরপরে যে কোন প্রধান বা মূল দেব বা দেবীর পূজাপাঠ শুরু করতে হবে। যেকোনো পূজা শুরু করার আগে উপরিউল্লিখিত পূজা পদ্ধতি (rules of domestic worship) অনুসরণ করে পূজা করা যাবে।

উপরিউল্লিখিত পূজাগুলো (rules of domestic worship)সম্পন্ন করে আসন প্রতিষ্ঠা, কিন্তু যদি প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ অথবা ছবি থাকে তাহলে আসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়না। 

আসন প্রতিষ্ঠার পর স্নানাভিষেক পর্ব সম্পন্ন করতে হবে। স্নানাভিষেক পর্বের পর তিলক, শৃঙ্গার এবং দীপ ধুপ প্রজ্জলন করে মূল পূজা শুরু করতে হবে। আরতি করার আগে অথবা শৃঙ্গার পর্ব সেরে ভোগ নিবেদন করতে হবে।

Rules of domestic puja: ভোগ নিবেদন

ভোগ নিবেদনের জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করে, প্রভুকে পরিষ্কার পাত্রে ভোগ নিবেদন করতে হবে।

Rules of domestic puja: আরতি পর্ব

সাধারণতঃ ধূপ প্রদীপ জলশঙ্খ বস্ত্র/রুমাল পুষ্প চামর এইগুলো দিয়ে নিত্য ঘরোয়া পূজা অথবা বিষয়ে পূজায় আরতি করা হয়ে থাকে। তবে শুধু ধূপ প্রদীপ পুষ্প দিয়েও নিত্য ঘরোয়া পূজায় আরতি করা যায়, যদি বাকিগুলো হাতের কাছে না থাকে।

আরতি করার পদ্ধতিঃ-

ধূপ দিয়ে শুধু সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

প্রদীপ দিয়ে চারবার পাদপদ্মে, দুইবার নাভিতে তিনবার মুখমণ্ডলে আর সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে। 

জলশঙ্খ দিয়ে তিনবার মুখমণ্ডলে আর সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

বস্ত্র/রুমাল, পুষ্প আর চামর দিয়ে শুধু সর্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।

FAQs:-

তুলসী কী সব দেবী দেবতার পূজায় ব্যবহার করা যাবে?

স্ত্রীদেবতার পূজা করার সময় তুলসী ব্যবহার করা যাবেনা। শিব ঠাকুরকে তিনটি তুলসী দিয়ে পূজা করা যাবে। গণেশপূজায় তুলসী ব্যবহার করা যাবেনা।

হ্যাঁ করা যাবে। নিত্য ঘরোয়া পূজায় পুষ্পাদি না থাকিলে কেবল জল দিয়ে পূজা করিলেও পূজা সিদ্ধ হইবে।

না করা যাবেনা। উপনীত ব্রাহ্মণ পুরোহিত ছাড়া প্রতিমা বা শালগ্রাম দিয়ে পূজা করার অধিকার কারোর নাই। সাধারণ মানুষ দেব দেবীর পূজা পটে-ঘটে-ছোটো মূর্তিতে করতে পারবে।

সকল দেব দেবীর পূজোতেই ফুলের প্রয়োজন হয়। ফুল ছাড়া কোনো পূজা হয় না। দেবতাগণ সোনা মানিক্য দ্বারা খুশী হোন না, খুশী হোন কেবল ফুলের দ্বারা। তাই ফুল পূজায় অত্যাবশক।

মাটিতে যে ফুল পড়ে থাকে সেই ফুল দেবতাকে উৎসর্গ করা যায়না, চুরি করা ফুল দিয়ে পূজা করা যায়না। কেতকী ফুল দিয়ে কোনো পূজা করা যায়না।